অসামান্য গল্প এবং চরিত্র যার ছবিতে একই তারে বাঁধা : পরিচালক তপন সিংহ
Source : Google |
দ্য হিন্দু পত্রিকা একজন বাঙালী পরিচালকের কাজ নিয়ে লিখেছিল - ' Complex ideas through a simple narrative.....!' যা চমৎকার ভাবে মিলে যায় তপন সিংহের সিনেমা দেখলে। একটা অপূর্ব গল্পকে সুন্দর চিত্রনাট্যের মধ্যে জীবন্ত করে তুলতেন তিনি যা ভারতবর্ষের অনেক কম পরিচালকই পেরেছেন। তার ছবির তালিকা দেখলে বোঝা যাবে 'দাদাসাহেব ফালকে' পুরস্কারের যোগ্য অধিকারী তিনি।
Film : Kabuliwala ; Source : Google |
শিল্প এবং সুন্দর ভাবনার সংমিশ্রণে তৈরী রঙ-বেরঙের চরিত্রগুলি আজও সিনেমাপ্রেমীদের স্মরণে আছে। রহমত কাবুলিওয়ালা থেকে শুরু করে 'ক্ষুধিত পাষাণ'-র ছবি বিশ্বাস, তার হাতে ফুটে ওঠা অসাধারণ সব চরিত্র। বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ ভারতীয় ছবি এবং শ্রেষ্ঠ বাংলা ছবির জন্য পুরস্কৃত হয় 'কাবুলিওয়ালা' যা তার কাজকে বিশ্বদরবারে উপস্থিত করে। যদিও ছবি বিশ্বাসকে সামলানো যা তা মানুষের কম্ম ছিল না। মেটিয়াবুরুজের একটি মুসলমান হোটেলে শুট চলাকালীন সে কালীন অসামান্য প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন তিনি।
Film : Kshudista Pashan; Source : Google |
তারপর ছবি বিশ্বাসের সাথে এতই ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল পরাচালকের যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিড করছেন জেনেও তিনি পোস্টমাস্টারের রোলটি আনন্দের সঙ্গে নিলেন। ওত ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও দু-তিন দিন সময় দিয়েছিলেন 'ক্ষুধিত পাষাণ' র জন্য।
Film : Sagina Mahato ; Source : Google |
শুধু বাঙলার নয়, হিন্দি ছবির চেনা মুখগুলিও তার ছবিতে শিরোমণির স্থান পেয়েছেন। হিন্দি ছবির সর্বকালের সেরা অভিনেতা দিলীপ কুমার। ছবির নাম 'সাগিনা মাহাতো' এবং তার বিপরীতে থাকবেন সায়েরা বানো। দিলীপকুমার সিন পছন্দ না হলে শুটিং করেন না একথা জেনে ভয়েই ছিলেন পরিচালক, তবে উপস্থিত বুদ্ধির জেরে এই তরণীও পার করেছেন তপন সিংহ।
Film : Hatey Bazare ; Source : Google |
এরপর অশোক কুমারের মতো নামী অভিনতাও তার ছবি ' হাটেবাজারে' তে অভিনয় করেছেন। তার চরিত্রটির নাম ডঃ আনন্দী মুখোপাধ্যায়, আর বৈজয়ন্তীমালা ছিপলির ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। পুরস্কার পাওয়া আর্ট ফিল্ম হলেও তার জগতের একটি অন্যতম নক্ষত্র ছবিটি।
Film : Jhinder Bandi ; Source : Google |
মহানায়ক উত্তম কুমারকে তিনি এক অধ্যাপক হাসেবে পার্শ্ব চরিত্রের জন্য প্রথম ডাকলেও পরে 'ঝিন্দের বন্দী', 'জতুগৃহ' -র মতো ছবিতে উওমকে আমরা ঝিন্দের রাজা এবং শতদলের মতো চরিত্রে পেয়েছি।
Film : Galpo Holeo Satti; Source : Google |
এছাড়াও তার সর্বকালের সেরা ছবি 'গল্প হলেও সত্যি' ছবিতে রবি ঘোষকে পেয়েছি ধনঞ্জয়ের চরিত্রে যা সত্যিই দর্শকদের মনে ছাপ ফেলেছিল। সিনেমার 'Glamorous' দুনিয়ার বাইরে গিয়ে ' Middle of the road' ছবি তৈরি করা এই পরিচালক ছোটোদের জন্য ' সফেদ হাতি', 'সবুজ দ্বীপের রাজা', ' আজ কা রবিনহুড', 'আজব গাঁয়ের আজব কথা' এমন অনেক ছবি তৈরি করেন যা ছোটোদের আনন্দ দেওয়ার সাথে সাথে মূল্যবোধের শিক্ষাও দিয়ে গেছে।
এমন কালজয়ী পরিচালক যিনি চলচ্চিত্রের প্রকৃত ভাষাকে বুঝে হাসি ও কান্নায় সমানুপাতে সিনেমা বানিয়েছিলেন তার মতো ' আপনজন' বোধহয় বাংলা সিনেমা আর ফিরে পাবে না।
A Blog by - Sreya Mukherjee
Keep track for more interesting cinema facts and stories... 📝✒️
খুব পরিণত লেখা।
উত্তরমুছুনঅনেক ধন্যবাদ
মুছুনখুব ভালো লাগলো, অনেক কিছু জানতে পারলাম।
উত্তরমুছুনখুব ভালো হয়েছে
উত্তরমুছুনআমি তোমার কলেজের জুনিয়র, কোনওদিন সেইভাবে কথা হয়নি ঠিকই। তবে তোমার লেখা বরাবরই ভীষণ ভালো লাগে। ❤️
উত্তরমুছুন